প্রত্নতাত্বিক স্থান সমূহ প্রতিদিনই খোলা রাখার প্রস্তাব টোয়াবের 

Date: 24 November, 2022
7771.jpg

আরও বেশি দেশি-বিদেশি পর্যটক টানতে দেশের সকল জাদুঘর ও প্রত্নত্ত্ব স্থান সমূহ সপ্তাহের প্রতিদিনই খোলা রাখার প্রস্তাব করেছে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (টোয়াব)।

টোয়াব জানায়, প্রত্নত্ত্ব পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণ অথচ দেশের বিভিন্ন জাদুঘর ও প্রত্নত্ত্ব স্থানগুলো সাপ্তাহিক ছুটির কারণে অন্তত একদিন বন্ধ রাখায় দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ইচ্ছে থাকা সত্বেও  সময় স্বল্পতায় এসব স্থান ভ্রমণ করতে পারেন না যা হতাশার পাশাপাশি অর্থিনীতিকেও ক্ষতি গ্রস্থ করছে।

উল্লেখ্য, দেশে প্রায় সাড়ে চারশো ঐতিহাসিক নিদর্শন, জাদুঘর, প্রত্নত্ত্ব স্থান রয়েছে। সারাদেশে রয়েছে ১৭টি প্রত্নত্ত্ব জাদুঘর। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগের লালবাগ জাদুঘর, বালিয়াটি জাদুঘর, রাজশাহী বিভাগের পাহাড়পুর জাদুঘর, মহাস্থান জাদুঘর, রবীন্দ্র কাচারী বাড়ি জাদুঘর, রংপুর বিভাগের তাজহাট জমিদার বাড়ি জাদুঘর, খুলনা বিভাগের রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি জাদুঘর, এম এম দত্তবাড়ি জাদুঘর, রবীন্দ্রনাথের শ্বশুরবাড়ি, চট্টগ্রাম বিভাগের ময়নামতি জাদুঘর, জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর, বরিশাল বিভাগের শেরেবাংলা স্মৃতি জাদুঘর অন্যতম। পর্যটনে এগিয়ে যেতে প্রত্নত্ত্ব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা।

প্রত্নত্ত্ব অধিদফতরের তথ্য মতে, দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীরা গবেষণা, প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে বিভিন্ন প্রত্নতাত্বিক স্থান পরিদর্শনে আসেন। দেশে প্রায় সাড়ে চারশো প্রত্নত্ত্ব স্থাপনা থাকলেও মাত্র ২৪টি স্থানের টিকিট বিক্রি হয়। আর এগুলো থেকে বছরে প্রায় ৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) ১২ নভেম্বর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পর্যটকদের জন্য জাদুঘর ও প্রত্নত্ত্ব স্থানগুলো প্রতিদিন খোলা রাখার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয়। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাস, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি ইত্যাদি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের বিষয়বস্তু। পর্যটকরা বাংলাদেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি জাদুঘর, প্রত্নতাত্বিক স্থানগুলো দেখার জন্য সময় বের করেন।’

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয় স্থান উল্লেখ করে চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন, সমসাময়িক চিত্রকর্ম, ভাস্কর্য ইত্যাদি ছাড়াও এখানে সংরক্ষিত আছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মূল্যবান বস্তুসামগ্রী। কিন্তু সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত জাদুঘর, প্রত্নতত্ত্ব স্থানগুলো সাপ্তাহিক বন্ধ থাকে। বিদেশি পর্যটকরা সাধারণত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আমাদের দেশে ভ্রমণে আসেন। অনেক সময় বিদেশি পর্যটকরা জাদুঘর, প্রত্নতত্ত্ব স্থানগুলো সাপ্তাহিক বন্ধের কারণে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সময়ের স্বল্পতার কারণে এসব স্থান ভ্রমণ করতে পারেন না। ফলে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’ বিদেশি পর্যটকদের কাছে স্থানগুলো আকর্ষণীয় করে প্রদর্শনের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বৃদ্ধির করার পাশাপাশি বাংলাদেশের পর্যটন উন্নয়ন ও সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধিতে অধিক অবদান রাখা যেতে পারে বলেও দাবি সংগঠনটির।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত জাদুঘর ও প্রত্নতত্ত্ব স্থানগুলো সাপ্তাহিক বন্ধ না রেখে প্রতিদিনই খোলা রাখার ব্যবস্থা করার দাবি করা হয় চিঠিতে। এতে বলা হয়, ‘বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের পর্যটন উন্নয়নে অবদান রেখে আমাদের বাধিত করবেন। এজন্য সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ অন্য আরেকটি দিন অর্ধেক জনবল দিয়ে স্থানগুলো খোলা রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’

এ প্রসঙ্গে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের মহাপরিচালক চন্দন কুমার দে বলেন,  প্রত্নত্ত্ব অধিদফতরের অধীনে থাকা স্থাপনাগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও জনবলের ছুটির জন্য সপ্তাহে একদিন পূর্ণ দিবস, একদিন অর্ধদিবস বন্ধ থাকে। সাধারণত রবিবার বন্ধ থাকে। তবে সাত দিন চালুর প্রয়োজনীয়তা থাকলে সেটি যাচাই করে পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

-B

Share this post



Also on Bangladesh Monitor