পর্যটক সংকটে কুয়াকাটা - ব্যবসায় ধস

মনিটর রিপোর্ট Date: 03 August, 2024
পর্যটক সংকটে কুয়াকাটা - ব্যবসায় ধস

বরিশাল: পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে সারা বছরই কমবেশি পর্যটকের আনাগোনা থাকে। এতে পর্যটন–সংশ্লিষ্ট ব্যবসা চাঙা থাকে। তবে গত কিছুদিন সৈকতটিতে পর্যটন ব্যবসায় ধস নেমেছে। পর্যটকের উপস্থিতি একেবারেই কমে গেছে; খালি পড়ে আছে হোটেল-মোটেল। 

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাতের প্রভাব পড়েছে; স্থবির হয়েছে পড়েছে পর্যটন ব্যবসা।

পর্যটন–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, কুয়াকাটায় ১৫০টির বেশি আবাসিক হোটেল-মোটেল আছে। প্রতিটি হোটেলই এখন ফাঁকা পড়ে আছে। পর্যটকদের আনাগোনা কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন এসব হোটেল-মোটেলের সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। বেশির ভাগ হোটেলেই পর্যটক নেই। এমন অবস্থায় হোটেলগুলোর দেখভালের খরচ তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা।

হোটেল সিকদার রিসোর্ট অ্যান্ড ভিলার সহকারী ব্যবস্থাপক শাহীন আলম বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে আমাদের প্রতিটি ভিলা খালি পড়ে আছে। ১৬তলা টাওয়ার ভবন এবং রিসোর্টের মূল ভবনের কক্ষগুলোও খালি। আমাদের হোটেলের প্রতি মাসের বিদ্যুৎ বিলই দিতে হয় ২৪ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া ২০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে; প্রতি মাসে ৫০ লাখ টাকা বেতন দিতে হয়। এর বাইরে আরও ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা অতিরিক্ত খরচ রয়েছে। চলমান পরিস্থিতির কারণে এ মাসে আমরা বিরাট লোকসানে পড়ে গেলাম।’

হোটেল কানসাই ইনের ব্যবস্থাপক জুয়েল ফরাজী বলেন, কারফিউর কারণে হোটেলটিতে ১৫ জন পর্যটক আটকে পড়েছিল। সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাঁরা নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছেন। এখন পুরো হোটেলের রুম ফাঁকা পড়ে আছে।  চিরচেনা কুয়াকাটা আবার কবে নাগাদ স্বগৌরবে ফিরবে, সেটা এখনই বলা মুশকিল।

পর্যটন খাতের আরও বেশ কিছু ব্যবসায় জানান পর্যটকের অভাবে ধস নেমেছে ব্যাবসায় । বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষদের অবস্থা বেশি খারাপ। এর মধ্যে আছেন চা-পানের দোকানদার, সৈকতের ছাতা-বেঞ্চ ব্যবসায়ী, শুঁটকি বিক্রেতা, ফটোগ্রাফার, ডাব-বাদাম বিক্রেতা, মোটরসাইকেলচালক, রিকশা-ভ্যানের চালকসহ আরও কিছু পেশার মানুষ।

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, ‘করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই একের পর এক ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসে কয়েক বছর ধরেই কুয়াকাটায় পর্যটননির্ভর বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণেও আমরা বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। কুয়াকাটায় যাঁরা বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের প্রত্যেকেরই কমবেশি ব্যাংকঋণ আছে। প্রতি মাসে ব্যাংকের কিস্তি পরিশোধ করতে হয়। তার ওপর নানান খরচ তো আছেই। এত এত খরচ মিটিয়ে আমরা ব্যবসায়ীরা আর টিকে থাকতে পারছি না। চলমান পরিস্থিতির কারণে পর্যটননির্ভর ২০টি খাতে আমাদের অন্তত ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।’

-B

Share this post



Also on Bangladesh Monitor