ঢাকা : প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ফেস্টের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। ‘পর্যটনে পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্ব পর্যটন দিবস পালিত হচ্ছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্পিকার শিরীন শারমিন বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে যথাযথ ব্যবস্থার মাধ্যমে আমাদের পর্যটনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দেশের সৌন্দর্য তুলে ধরে দেশে-বিদেশে পর্যটকদের আকর্ষিত করতে হবে। আমরা সেন্টমার্টিনকে প্লাস্টিক ফ্রি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আগামীতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকেও প্লাস্টিক ফ্রি করার উদ্যোগ নেবো। সরকারের সব পরিকল্পনা যথাযথ বাস্তবায়ন করা হবে। এর জন্য আমরা সবাই নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবো। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে এর একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।
শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বিনোদমমূলক কোনও কার্যক্রম নাই। যদি বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বিভিন্ন কার্যক্রম চালু করা যায় তবে বিদেশ পর্যটকরা আরও বেশি পরিমাণে আগ্রহী হবে। ঢাকা সিটিতে পর্যটকদের জন্য বাস ট্যুরের আয়োজন করা যেতে পারে। এতে করে বিদেশি পর্যটকরা একটি ট্যুরের মাধ্যমে ঢাকা সিটির ঐতিহ্যগুলো দেখতে পারবে। পুরান ঢাকার জন্য একটি রুট, নতুন ঢাকার জন্য একটি রুট, নদী পথেও একটি ট্যুরের আয়োজন করা যেতে পারে। আমি মনে করি এটি আমাদের জন্য অনেক কার্যকর হবে।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী পরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, পর্যটনের সহায়তা করার জন্য প্রত্যেকটি জেলা পরিষদ সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। যদি কোনও জেলা প্রশাসক অসহযোগিতা করেন তবে সেটি মন্ত্রিপরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণের ব্যবস্থা করবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. রাহাত আনোয়ার প্রমুখ।
আরও পড়ুন: নানা আয়োজনে বান্দরবানে বিশ্ব পর্যটন দিবস উদ্যাপন
বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড (বিটিবি)। চার দিনব্যাপী আয়োজিত এই ফেস্টিভ্যাল ২৭ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে সকালে বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজনা করা হয়। র্যালিতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট সরকারি বেসরকারি স্টেকহোল্ডাররা অংশ নেন।
বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যালে এয়ারলাইন্স, হোটেল, রিসোর্ট, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, ট্যুরিস্ট-ভেসেল, ট্রাভেল এজেন্ট ও ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। অংশ নিচ্ছে বিভিন্ন জেলার পর্যটন পণ্য ও সেবা প্রদানকারীরা। দেশব্যাপী পর্যটনের বিভিন্ন অফারও থাকবে এ উৎসবে।
চারদিনব্যাপী বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যালে ২০ টি হোটেল-রিসোর্ট, অঞ্চলভিত্তিক খাবারের স্টল ৭০টি, ডিস্ট্রিক্ট ব্রান্ডিং এর আওতায় ২৯টি জেলা, ক্রাফট স্যুভিনিয়র ২৬টি, এয়ারলাইন্স দুটিসহ বিনোদন পার্ক, ট্রাভেল এজেন্ট, ট্যুর অপারেটর, ট্যুর গাইড, বিদেশি দূতাবাসসহ ১৬০টির বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
আরও পড়ুৃন: রেকর্ডসংখ্যক পর্যটকের আশায় সাগরকন্যা কুয়াকাটা
এ উৎসবে আয়োজন থাকবে বিভিন্ন দেশের খাবারসহ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের। থাকবে জামতলার সাদেক গোল্লা, নরসিংদি জেলার নকশি পিঠা, নাটোরের কাঁচা গোল্লা, কুষ্টিয়ার কুলফি, পুরান ঢাকার হাজীর বিরিয়ানি, বাকরখানি, মুক্তাগাছার মণ্ডা, চট্টগ্রাম এর মেজবান, খুলনার চুইঝাল, বিসমিল্লাহর কাবাব, কুমিল্লার রসমালাইসহ ৬৪ টি জেলা থেকে ৭০ টির বেশি ঐতিহ্যবাহী ফুড স্টল।
এ উৎসবে তাঁত, জামদানি তৈরির প্রক্রিয়া দেখা যাবে। দেশের ঐতিহ্য মসলিন পুনরুদ্ধার হওয়ার গল্প এবং মসলিন তৈরির প্রক্রিয়া প্রদর্শন করা হচ্ছে উৎসবে।
-B